এএফসি গ্রাসরুটস ফুটবল ডে ও বিশ্ব ফুটবল সপ্তাহ এবং শামস-উল-হুদা ফুটবল একাডেমির ‘ভাষা সৈনিক মুসা ভবনের’ অনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়েছে। শুক্রবার (২৩ মে) বেলা ১১টায় যশোর সদরের হামিদপুরের একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আর্জেন্টিনার অ্যাম্বাসেডর মি. মারসেলো কারলোস সিসা। প্রধান অতিথি একাডেমিতে অবস্থিত ভাষা সৈনিক মুসা মিয়া ভবনের উদ্বোধন করেন।
এএফসি গ্রাসরুটস ফুটবল ডে ও বিশ্ব ফুটবল সপ্তাহের বেলুন উড়িয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি মি. মারসেলো কারলোস সিসা। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি তাবিথ আওয়াল। উপস্থিত ছিলেন বাফুফের সহ সভাপতি নাসের শাহারিয়ার জাহেদী, ওহেদ উদ্দীন চৌধুরী, ফাহাদ কবীর, সদস্য ইকবল হোসেন, গোলাম দাউদ, কামরুল হাসান, সাখাওয়াত হোসেন শাহিন, সাইদুর রহমান মনি প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বাফুফে সভাপতি তাবিথ আওয়াল বলেন, আমরা তৃণমূল পর্যায় থেকে ফুটবল খেলোয়াড়দের উন্নয়ন করতে চাই। গ্রাসরুটস ফুটবল দিবস ও বিশ্ব ফুটবল সপ্তাহে তৃণমূল থেকে ছয়শ’ ফুটবলার অংশ নিয়েছে। এটা একটি বড় রেকর্ড। বাফুফের অন্তর্ভূক্ত রয়েছে ২২২টি একাডেমি। প্রতিটি একাডেমির পেছনে বাফুফে কোনো না কোনোভাবে সাপোর্ট দিয়ে থাকে। কারন গ্রাসরুটস লেভেলে আমাদের খেলোয়াড় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। আমরা এসব ফুটবলারের যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তুলতে চাই। এই মাঠে তৃণমূল পর্যায় থেকে অনেক খেলোয়াড়ের অংশগ্রহণ যা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। আজকে এখান থেকে আমি যে উৎসাহ নিয়ে যাচ্ছি এটা দেশের প্রতিটি অঞ্চলে ছড়িয়ে দিবো।
তিনি আরও বলেন, আর্জেন্টিনা ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি লিখিত চুক্তি আছে দুই দেশের ফুটবল উন্নয়নের জন্য। একইসাথে দুই দেশের সমর্থকদের ভালোবাসা রয়েছে। আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত নিজেই বাংলাদেশের তৃণমূল পর্যায়ের ফুটবলারদের দেখতে ছুটে এসেছেন। যা খেলোয়াড়দের দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করবে। আমরা চাই, শামস্-উল-হুদা ফুটবল একাডেমি যা করছে, তাতে গ্রাম পর্যায় থেকে ফুটবলের উন্নয়ন হবে।
এরপর একাডেমি মাঠে ৭ থেকে ১৪ বছর বয়সী ফুটবলাররা একটি সংক্ষিপ্ত ম্যাচে অংশ নেয়। অতিথিরা তাদের ক্রীড়ানৈপূণ্য উপভোগ করেন।
এই সময় স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে প্রধান অতিথি মি. মারসেলো কারলোস সিসা বলেন, বাংলাদেশে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে ফুটবল খেলা হয়। এখানে ধনি-গরিব, ছোট-বড় সব স্তরের মানুষই ফুটবল খেলা দেখতে মাঠে আসে। ফুটবল খেলার আনন্দ সকলেই ভাগাভাগি করে নেয়। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, বাংলাদেশে ফুটবলের সফলতা আসবে।
পরে বাফুফে সভাপতি যশোর প্রেসক্লাবে কৃতি সাবেক ও বর্তমান ফুটবলারদের সাথে এক সংক্ষিপ্ত মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। সেখানে যশোরের কৃতিমান সাবেক ফুটবলারদের পক্ষ থেকে বাফুফে সভাপতিকে স্মারক উপহার তুলে দেন নেতৃবৃন্দ। সম্বর্ধনার জবাবে বাফুফে সভাপতি বলেন, ফ্যাসিস্ট পতিত আওয়ামী লীগ গত ১৭ বছর ধরে দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে দলীয় কার্যালয়ে পরিণত করেছিলো। যার থেকে বাদ পড়েনি এই যশোর শামস-উল-হুদা স্টেডিয়াম ও তার খেলোয়াড়বৃন্দ। দেশের ক্রীড়াঙ্গনে যশোরের অবদান অনস্বীকার্য। এই যশোরের কৃতি খেলোয়ারবৃন্দ এক সময় জাতীয় ফুটবলে ব্যাপক অবদান রেখেছেন। সেই ঐতিহ্যকে পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা ধ্বংস করেছিল।
তিনি বলেন, সময় এসেছে দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে তার ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে হবে। যশোর স্টেডিয়ামকে শুধু আন্তর্জাতিক মানের করলেই হবে না, এখানে আন্তর্জাতিক মানের খেলোয়াড় তৈরীতে কাজ করতে হবে।
তিনি যশোরের উন্নয়নে সাবেকমন্ত্রী বিএনপি নেতা মরহুম তরিকুল ইসলামের অবদানের কথা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে যশোর ক্রীড়াঙ্গনের সার্বিক উন্নয়নে বাফুফের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে বিএনপির কেন্দ্রীয় খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, যশোর জেলা বিএনপির সাধরণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, যশোর চেম্বারের সভাপতি মিজানুর রহমান খান, সাবেক ফুটবলার বাঘা সেলিম, হাফিজুর রহমান খান, টিটো, আব্দুস শহীদ লাল বাবু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা গেজেট/এএজে